মানবতার পর্দা
ফাতিমা এখন বিনা দ্বিধায় স্কুলে যাবে। বিশেষ কাপড়ের অজুহাতে তাকে আর শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হবে না। ফাতিমার মা অনবরত বছরের পর বছর কোর্টের চক্কর লাগিয়ে কন্যাকে তার মৌলিক অধিকার এনে দিয়েছে।
Representative image |
সম্প্রতিক গুয়াহাটি হাইকোর্ট ব্যতিক্রমী বিচারের মাধ্যমে এমনই অষ্টম শ্রেণীর ফাতিমাকে হিজাব পড়ে কৃষ্ট জ্যোতি মিশন স্কুলে তার শিক্ষা অব্যাহত রাখার অনুমতি দেয়। এখন ফাতিমা যেমনটা সে এবং তার অধিপতি মাতা চায় হিজাব পরিধান করে উক্ত বিদ্যালয়ে যাবে।
প্রকৃতপক্ষে, এটি একটি ঐতিহাসিক বিজয় যা তার মা আলে আহমেদ দীর্ঘ ন'বছর ধরে সংগ্রাম করে অর্জন করেছে। ২০১৩ সালে অঞ্চলের একাকী ইংরেজি মাধ্যম মিশন স্কুল ইউনিফর্ম আদর্শের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ধার্মিক প্রতীক হিজাব পড়ে বিদ্যালয়ে আস্তে বিপত্তি জানায়। কিন্তু ছাত্রীর মা থেমে যাননি, বরং আইন অস্ত্র নিয়ে সংকল্পের সঙ্গে রুখে দাড়ান। মাতৃ উদ্যোগ শিক্ষার মেরুদন্ড। প্রায় দীর্ঘ দশ বছর পর মানবিক অঙ্গভঙ্গি হিসাবে কোর্ট ফাতিমাকে স্বাধীন অধিকার হিজাবের সঙ্গে মৌলিক অধিকার শিক্ষা অর্জনেরও নির্দেশ দেয়।
ইংরেজিতে পড়ুন: Hijab & Humanity
এখানে একটু উদ্বিগ্নতার বিষয় এই যে কর্ণাটকে বিদ্যালয় পোষাক থেকে আবির্ভূত হিজাব ইস্যু সারা দেশে আগুনের মত ছড়িয়ে পড়ে। রাজ্যের হাই কোর্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা লাগিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ভাববার বিষয় যে দুই রাজ্যে দুটি কোর্টের নির্দেশ ভিন্ন হলেও প্রশাসনিক ক্ষমতা একই। উক্ত বাস্তবতার বিশ্লেষণ প্রত্যক্ষ করে যে ক্ষমতাসীন প্রভাব থেকে ভারতীয় বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং মুক্ত।
যাইহোক, আসাম উচ্চ আদালত পরিস্কার করে দেয় যে উক্ত সিদ্ধান্ত যেন আগামী কোন মামলার জন্য প্রমাণ হিসেবে বিবেচনা না করা হয় যদিও কারণ একইভাবে সংশ্লিষ্ট হয়ে যায়। বর্তমান বিচার শুধুমাত্র মানবিক চিন্তা ভাবনার উপর ভিত্তি করে প্রণয়ন করা হয়েছে। আসামের এই মুসলিম পরিবার মূলত কেরালার যেখানে হিজাবের পরিধান একটি অভ্যাসগত এবং ধর্মীয় স্বাভাবিকতা। কেরালার মধ্যে সর্বজনীন হিজাবের সাথে সম্পর্কিত কারণগুলি আরব সংস্কৃতি বা উচ্চ ধর্মীয় উদ্বেগ, যথাযথ সাংবিধানিক সচেতনতা বা অনড় নেতৃত্বের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে। সেই কারণেই ছাত্রীর মা তার অধিকার ধর্ম ও শিক্ষা কোনো ব্যাতিক্রম ছড়ায় উভয়কেই প্রাপ্তি করতে অটল-স্থায়ী ছিলেন যদিও তিনি তার রাষ্ট্র থেকে অনেক দূরে।
আসাম যেখানে মোট রাজ্য জনসংখ্যার প্রায় ৪০% শুধু মুসলমান এবং অন্যান্য রাজ্যের সাথে এই ঘটনাটি সম্পর্কিত করলে দেখা যায় যে নারীবাদাদ এই আকাঙ্ক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত। যেহেতু হিজাব বিরোধী বিক্ষোভ যখন নারীবাদ হতে পারে, হিজাব সপক্ষে যে নারী-আন্দোলন চলছে সেটাও অবশ্যই নারীবাদ - বরং অন্তর্বিভাগীয় নারীবাদ যা বুদ্ধিজীবীরা উপেক্ষা করে থাকে।
সুতরাং, বিচার বিভাগকে এই ধরনের অন্তর্বর্তী অধিকারগুলির বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত। এই 'মানবিক অঙ্গভঙ্গি' মানবিক পরিষেবার জন্য উদাহরণ হিসাবে বিবেচিত হওয়ার জন্য স্বাগত জানাই।
Comments
Post a Comment