#Day26 #Ramadan 2021
রবিবার, ৯ এপ্রিল।
রাসূলুল্লাহ (স) ইরশাদ করেন:
রোযা ঠাল স্বরপ। সুতরাং, সে অশ্লীলতা ও মূর্খতা করবেনা। যদি কোনো ব্যাক্তি তার সঙ্গে ঝগড়া করে কিংবা তাকে গালাগালি দেয় তখন সে দুবার বলবে: আমি রোযাদার।
আজ কোথা থেকে আরম্ভ করবো বুঝতে পারিনা। এতই ব্যাস্ত ছিলাম সারাটা দিন। রাত্রে অনিকুলকে একটি রোযা সম্পর্কিত হাদীস ও তার বাংলা অনুবাদ পাঠালাম। দিন ১০ টার দিকেই বেশির ভাগ পাঠিয়ে দিই। সকাল প্রহারে উপন্যাসটিও পড়তে পায়নি। জামিল এসেছিল বলে অল্প পড়িয়ে ছেড়ে দিলাম। দুদিন আগে উনাইস উস্তদকে বলেছিলাম যে ইসলাম অন ওয়েবে বাংলার ভোট ও তার ফলাফল সম্পর্কে একটি বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ আসা ভালো। ইনশা আল্লাহ আমি লিখে দিবো। কিন্তু এখনও তা আরম্ভ করিনি। আর আজ সারাদিন হবেও না।
তিন চার দিন থেকে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে মসজিদ পরিষ্কারের পরিকল্পনা আজ বাস্তবায়িত হল। দারুল হুদা থেকে এসে প্রথম দিনেই মসজিদের দশা দেখে এই ভাবনা আসে। সামাদকেও ডেকে নিয়েছি। বড়ো ছেলেদের পাওয়া দুষ্কর, সবাই তো ভিন রাজ্যে। নুরুজ্জামান এসেছে, কিন্তু সেও কোনো কাজে ব্যাস্ত। আর অন্য যারা আছে, তারাও কোনো কাজে। তাই মসজিদের সঙ্গে এই ছোটদের সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। অবশ্যই সাকিরুল, সুভান ছিল। এদের সঙ্গে প্রায় দশ জন বাচ্চাদের নিয়ে ১০টার আগেই মসজিদ পরিষ্কারে লাগলাম। ইতিকাফে আছেন দুখু দাদাও আমাদের সঙ্গে নিজ ইচ্ছায় কাজ করলেন। বাদাম দাদা বলেন এরাই ভবিষ্যতের সমাজসেবক। ঝুল ঝাড়া, এদিক ওদিক হয়ে যাওয়া সবকিছুকে সরঞ্জাম করা, পানি দিয়ে পরিষ্কার করা ইত্যাদি সারতে প্রায় বারোটা বেজে যায়। আর একঘন্টায় জোহরের নামাজ। লাইনও নেয়, কিভাবে সুখাবে? সাকিরুল নিশ্চিত হয়ে জেনারেটরে হ্যান্ডেল মারলো। এখানেই শুরু হলো নতুন ঝামেলা।
দাড়িবালা পটল মুসল্লি বলে: আমরাই তো পরিষ্কার করতে পারতাম। এখানকারই পানি দিয়ে ওরা ধুয়েছে। তেল দেওয়ার সময় কেউ নেয়, আর জেনারেটর চালাবে?
রাস্তায় টুপিবালা যদ্দিন বলে: লাইন থাকার সময়ই করতে পারতি।
সকিরুল শুনে উত্তর দিল: যাও গিয়ে করো। এতদিন ধরে?
অন্যদিকে, দুখু দাদা, বাবু, নিপুদা আরও কতক জন আমাদের কাজের প্রশংসা করে।
একটা ভালো কাজে দশটা বাঁধা থাকবেই।
এবার বলি লাইলাতুল ক্বদরের ব্যাপার। এই বাচ্চাদের নিয়েই রাত জাগবো। তারও খুব উৎসাহ। পঞ্চাশ টাকা করে তারা চাঁদা উঠালো। রাত্রি জাগরনের বাহানায় সেহরী আহারও হয়ে যাবে। সামাদ আমি পলশা গেলাম বৈকালে। এই সময় ইউসুফের নেতৃত্বে পোল্ট্রি, গ্যাস এবং জরুরি মসলা পাতি সবই মগরবের আগে বন্দোবস্ত। মসজিদের এক কোনায় রাখা আছে সব। ইমাম সাহেবের সতর্কবাণী: এই দিনেই কেন? বেশি বাচ্চাদের রাখা মানা আছে। করছো ঠিক আছে, এদের কিচিরমিচিরে যাতে ইবাদতের যোগ্য ব্যাক্তিদের খলাল না হয়। আরে, যে মসজিদে আসবে সে আসবেই। হোক সে বাাচ্চা থেকে আসুক আর নায় আসুক।
রাত্রে আবার যদ্দিন সাহেবের বড়ো ঘোষণা (মেতর আব্বা বলতেই খারাপ লাগছে):... রাত জাগা মনে ঘুম ছাড়া নয়। ইবাদত করা। হ্যাঁ, শুনলাম কেহু এর উদ্যোগ নিয়েছে। তবে মসজিদে ফিস্ট মিস্ট না হয়। মসজিদে যাতে রান্না না হয়।
সব আলোচনা ছেড়ে দিলাম। আব্বার খুবই রাগ। আজ হাদীস কুরআন বদলে গেছে নাকি। ওর ব্যাটারাই আগে করেছে। আমরাই মসজিদ সাজিয়েছি। মিলাদ করেছি। জামাতী মানুষরা তিন তিন দিন ধরে হাগবে-মুতবে, রান্না করবে, খাবে ঘুমাবে। দাওয়াতের নামে এগুলি তাদের এবাদত। আর আজ আমাদের ফিস্ট? এরা মাটির তোলে গেলে শয়তান দাবা পরবে। এই রকম রাগ রাগে এক ঘন্টা পার হলো।
সমস্ত কিছু সুবহানের বাড়িতে শিফট। তার মাই সব আমাদের করে দিলো। তারানা, খুশি, সালমা, রুম্ফির মারাও ছিল। এদের সালাতুস তাসবিহ শিখালাম। আদায়ও করলো।
এদিকে ছেলেদের নিয়ে আমরা মসজিদে যা যা পারি সব করলাম। রাত একটার পর ঘুমাতে এলাম। আড়াইটার সময় আবার সেহরী করতে উঠি।

Comments
Post a Comment