Ramadan in Lockdown | Day 24

#Day24 #Ramadan 2021

শুক্রবার, ৭ এপ্রিল।


মোবাইল খুলতেই দেখি তৌহিদের সাপ্তাহিক স্টিকার শো 'লা তানসু কিরাতা সুরাতিল ফাতিহা', সঙ্গে কিছু প্রতারণামূলক কমেন্টস। 

প্রত্যেক দিনের মত আজও একটু পরলাম, একটু মোবাইল ঘাঁটলাম। ভেবে নিয়ে ছিলাম যে আজ কাহাফ পড়বই। আব্বার বার বার ডাক ছাড়াও সময় এগিয়ে গোসল করলাম একেবারে বারোটা কুড়িতে। তার আগে কোথা থেকে খুঁজে নেইল কাটার বার করলাম। এবার তাড়াতাড়ি মসজিদে গেলাম। আজ জুমাতুল বিদা তো তাই লোক সমাহার একটু বেশি। নিচে তলা পুরোটাই ভর্তি। ভিড় কেটে সামনের তাক থেকে কুরআন আনা যাবেনা। লোকে কি বলবে? তাই মোবাইল বার করলাম। লে ফ্যার! গতকাল কীবোর্ডের লাগিং কমাবার জন্য যত পারি অ্যাপ্লিকেশন ডিলেট করে মোবাইল হালকা করেছি। আমার খেয়ালই ছিলনা যে কোরআনও ডিলেট করেছিলাম। জানি যে এখন অ্যাপ ডাউনলোড করা দুষ্কর ব্যাপার। তাই গুগলে সূরা কাহাফ সার্চ করলাম। কিন্তু বিফল আমার চেষ্টা। পাশের বুড়ো চাচা আমাকে মসজিদে মোবাইল চালাতে দেখে কি মনে মনে ভাবছেন আল্লাহই জানেন। ভাববেন হয়তো: আজকালকের ছেলেরা মসজিদেও মোবাইল ছাড়তে পারছেনা। স্ক্রীন অফ করে মনে মনে তাসবিহ পাঠ করতে লাগলাম। 

বিকালের হাট এখন সকালে হচ্ছে। হাটের জাগাও বদলে তেঁতুল তলা থেকে মাদ্রাসার প্রাঙ্গণ হয়ে গেছে। ভিড় ভার নেয়; এক যাচ্ছে এক আসছে। এই পরিস্থিতিতে কিনে বিক্রিকারি ব্যাবসায়ীদের লাভ নয় লোকসান হবে - আব্বার বিবেচনা। তবুও আবার কখন প্রশাসন কি বলবে? তাই আব্বা আলু বিক্রিতে জাননা।

প্রায় পনে তিনটার সময় সাখিরুলের সঙ্গে চললাম খেলতে আজ। বাপ রে বাপ ধপধিপে রোদ্রে পেট জ্বলতে লেগেছিল। কিন্তু খেলা ছেড়ে আসেনি। তাও আবার ভালো খেলতেও পারিনি। এক ওভারে দুটো ছক্কা খেয়ে ছিলাম। ব্যাটিংও ভালো হয়নি। হ্যাঁ, ফিল্ডিং ভালো করেছিলাম। দৌড়ে এসে যে ক্যাঁচ করলাম না সবাই হতবম্ব। আজকেও একবার হারলাম, আর এক বার জিতলাম। আশিক এসেছিল। তার সঙ্গেও কথা হলো। দারুল হুদা ছেড়ে সে রদিপুর মাদ্রাসায় নবম শ্রেণীতে ভর্তি এখন। আসর নামাজ পড়িনি। দ্বিতীয় ম্যাচে টস আমরা জিতেছি। প্রথমে ব্যাটিংয়ে যাওয়ার চেষ্টায় সফল হলাম, কিন্তু দু'বল খেলে আউট।  

ইউসুফকে নিয়ে গেলাম দীঘি দেখার বাহানায়। একবারে সব পরিবর্তন হয়ে গেছে। হেড-টেলের মত অদল বদল। নতুন দ্বীপ বসেছে। ফলে এই অনাবৃষ্টিতেও চারিদিকে চাষাবাদ। পাহাড়ে উঠতে উঠতেই বৃষ্টি। ওযুও হলনা আর উন্মুক্ত মাঠে নামাযও না। পিছন দিকে মারলাম দৌড়। রমযানের বাড়ির পিছনে সব এসে দাঁড়িয়েছে। আমরা পুরোটাই ভিজে গেছিলাম। বাড়িতে এসে নামাজ আদায় করি। 

তারাবির নামায ছেড়ে সুমন, আনাস আর আমি অন্য চর্চায়। গ্রামের, ছোটবেলার বিভিন্ন কথা। পরে নামায অবশ্যই আদায় করে নিয়েছিলাম। 

গতকাল আস্পিরান্ট নামক ওয়েব সেরিজটার একটা এপিসোড দেখেই আইএএস হওয়ার উত্তেজনা জেগেছে। হিন্দু পিডিএফ ডাউনলোড করলাম। অসম্পূর্ণভাবে ফাস্ট পেজ ও এডিটরিয়াল পেজটি পরলাম। মোবাইলে তো; তাই ডিস্ট্রাকশন তো হবেই। এদিক ওদিক করতে করতে ফেইসবুক খুললাম। আমার জুমাতুল বিদা পোষ্টটি আশি পার লাইক পেয়েছে। আমি ফেইসবুকে লাইক, কমেন্ট পরোয়া করিনা। ভালো লাগলে কিংবা তথ্যমূলক কিছু মনে হলে পোস্ট বা শেয়ার করে থাকি। আসলে আমার এডিটিংয়ে এক্সপার্ট বন্ধুরা ফেইসবুক ডমিনেন্ট করে আছে। ইউটিউবের ভিউজ কিন্তু বাড়াতে খুবই চেষ্টা করি। সামনের কিছু পোস্টগুলিকে লাইক দিয়ে মেসেঞ্জারে গেলাম। যে হাই দিয়েছিল, তাকে উত্তরে হেল্লো দিলাম। কাওকে বড়ো একটা লাইক। কারও মেসেজ এক্সপায়ার হয়ে গেছে। 

ঐশী ফেরেস্তা: (শুক্রবার রাত ৮:২৫ এ) আমি ভাই না...ওকে ব্র। 

আমি: (শুক্রবার রাত ৯:২৬ এ) তবে দাদা বলবো নাকি... তারাবীহ নামায হলো...

সে: হম

আমি: আচ্ছা... এই মাত্র পড়ে এলাম।...

সে: আমি উনার মেয়ে...।

....

আমাদের প্রথম চ্যাট হয় ২ মে রাত ১০:১৪ তে। আর বাকি মেসেজগুলো এখানে তুলতে পারলামনা। 

Comments

Post a Comment